এই সেতু নিয়ে কদিন ধরে মানুষ খুব হৈ চৈ করতে । তাই বিভিন্ন ধরনের ঘটনা আসতেছে প্রতিনিয়ত। পদ্মা সেতু চালুর ২৪ ঘণ্টার মাথায় সেতুতে মোটরসাইকেল চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়। এতে ঢাকামুখী বিভিন্ন জেলার মোটরসাইকেল আরোহীরা জাজিরা প্রান্তে এসে আটকা পড়েছেন। সকাল থেকে তাঁরা বিভিন্নভাবে পদ্মা নদী পার হওয়ার চেষ্টা করছেন। কেউ কেউ ভাড়া করা পিকআপে মোটরসাইকেল তুলে পদ্মা পার হয়েছেন। বিকল্প হিসেবে অনেকে ফেরি দিয়ে যাওয়ার জন্য শিমুলিয়া-জাজিরা নৌপথের সাত্তার মাদবর, মঙ্গলমাঝির ঘাটে যান। কিন্তু ঘাটে ফেরি না থাকায় ভোগান্তিতে পড়েন তাঁরা।
বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের কর্মকর্তারা জানান, গতকাল রোববার সকাল ৬টায় যখন পদ্মা সেতুর দুই প্রান্ত থেকে যানবাহন ছেড়ে দেওয়া হয়, তখন টোল দিয়ে মোটরসাইকেল আরোহীরা হুড়োহুড়ি করে সেতুতে ওঠেন। বিকেলে মোটরসাইকেলের ভিড় বাড়তে থাকলে জাজিরা প্রান্তে দীর্ঘ যানজট তৈরি হয়। রাতে সেতুতে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় দুই তরুণ নিহত হন। ওই দুর্ঘটনার পর সেতু কর্তৃপক্ষ সেতুতে মোটরসাইকেল চলাচল বন্ধের বিজ্ঞপ্তি জারি করে। আজ সকাল থেকে সেতু দিয়ে কোনো মোটরসাইকেল চলতে দেওয়া হয়নি।
গাজীপুরের তরুণ নুরুন্নবী গতকাল বিকেলে পদ্মা সেতু পার হয়ে ফরিদপুরে আত্মীয়ের বাড়িতে যান। আজ সকালে জাজিরা টোল প্লাজায় এসে জানতে পারেন, সেতুতে মোটরসাইকেল চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের কাছে খোঁজ নিয়ে ফেরিতে পদ্মা পাড়ি দিতে জাজিরার সাত্তার মাদবর, মঙ্গলমাঝির ঘাটে যান। বেলা ১১টা থেকে সেখানে ফেরির জন্য অপেক্ষা করছেন।
নুরুন্নবী প্রথম আলোকে বলেন, ছয়টি মোটরসাইকেল নিয়ে ১২ বন্ধু পদ্মা সেতু দেখতে এসেছিলেন। জাজিরা প্রান্তে এসে পাঁচটি মোটরসাইকেল নিয়ে ১০ বন্ধু ফিরে গেছেন। তিনি আত্মীয়ের বাড়িতে থেকে যান। আজ সকাল নয়টায় জানতে পারেন, সেতুতে বাইক নিয়ে উঠতে পারবেন না। এখন ফেরিও পাচ্ছেন না। কীভাবে পদ্মা পার হবেন সেই দুশ্চিন্তায় আছেন। বৃষ্টি-কাদার মধ্যে ঘাটে অপেক্ষা করছেন।
সম্প্রতি নতুন মোটরসাইকেল কিনেছেন শরীয়তপুর শহরের বাসিন্দা শরীফুল আলম। তিনি মোটরসাইকেল সার্ভিসিং করানোর জন্য ঢাকায় রওনা হন। সেতুর জাজিরা প্রান্তে গিয়ে জানতে পারেন, সেতুতে মোটরসাইকেল চলবে না। এখন পদ্মা পাড়ি দিতে ফেরিঘাটে অপেক্ষা করছেন। শরীফুল আলম বলেন, ‘পদ্মা নদী পার হওয়ার জন্য সারা দিন ধরে ঘুরছি। এখন ফেরির জন্য ঘাটে অপেক্ষা করছি।’
পদ্মা সেতু চালু হওয়ায় গত শুক্রবার শিমুলিয়া-জাজিরা নৌপথে নৌযান চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়। ফেরি সার্ভিস চালু রাখা হলেও গত তিন দিনে কোনো ফেরি চলাচল করেনি।
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন সংস্থার (বিআইডব্লিউটিসি) সহকারী ব্যবস্থাপক জামিল আহম্মেদ প্রথম আলোকে বলেন, বেলা ১১টার দিকে কিছু মোটরসাইকেল নিয়ে ফেরি কুঞ্জলতা শিমুলিয়া থেকে জাজিরার দিকে রওনা হয়। নদীর নাব্যতা সংকটে পাইনপারা এলাকায় ফেরিটি আটকে যায়। ওই ফেরি নামিয়ে আনার চেষ্টা করা হচ্ছে। ফেরিটি এলে ঘাটে অপেক্ষমাণ মোটরসাইকেল পার করে দিতে সমস্যা হবে না।
নতুন নতুন নিউজ এবং পোস্ট পেতে ভিজিট করুন
মূল পোষ্ট – প্রথম আলো